ভারতের নদীতে বাঁধ দিতে পারে চীন পাকিস্তানের পানি বন্ধ হলে

ভারত যদি পাকিস্তানের পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, তবে চীনও ভারতের নদীপথ বন্ধ করে দিতে পারে। শনিবার করাচিতে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (পিআইআইএ) আয়োজিত এক সেমিনারে এ বক্তব্য দেন বক্তারা।

সেমিনারে পিআইআইএর রিসার্চ অ্যাসিসটেন্ট মুহাম্মদ উসমান তার ‘ওয়াটার অ্যাসেটস অ্যান্ড রিসোর্স’ শীর্ষক প্রবন্ধে বলেন, পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার যে ধারণা রয়েছে, তাতে উজানের দেশ পানিপ্রবাহ আটকে রাখে এবং হঠাৎ করেই ভাটির দেশকে কোনো প্রকার সতর্কতা ছাড়া বন্যার আকারে পানি ছেড়ে দেয়। পাকিস্তান ও ভারতের ক্ষেত্রে পাকিস্তান ভাটির দেশ এবং ভারত উজানের দেশ। তবে চীন ও ভারতের ক্ষেত্রে চীন উজানের দেশ এবং ভারত ভাটির দেশ।

তিনি বলেন, ভারত যদি পাকিস্তানে পানিপ্রবাহে বাধা দেয়, তবে চীনও ভারতের পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দিতে পারে।

প্রবন্ধে তিনি বলেন, ভারত যদি পাকিস্তানের পানিপ্রবাহ বন্ধ করতে চায়, তবে তার নিজের অঞ্চলেই বন্যার ঝুঁকি বাড়বে। এ ছাড়া পানি বন্ধের জন্য বিভিন্ন অবকাঠামোর প্রয়োজন হবে। এতে তৈরি করতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ এবং কয়েক বছর সময় প্রয়োজন হবে।

সেমিনারে পিআইআইএ চেয়ারপারসন ড. মাসুমা হাসান জানান, চলতি বছরের ২২ এপ্রিলে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার ঘটনায় কোনো প্রমাণ ছাড়াই ইসলামাবাদকে অভিযুক্ত করে নয়াদিল্লি। এর জেরে ১৯৬০ সালে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সিন্ধুর পানি চুক্তি আগাম জানান না দিয়েই স্থগিত করে দেয় ভারত।

এদিকে শুক্রবার আমেরিকার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে পাকিস্তানের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি উসমান জাদুন বলেন, সিন্ধুর পানি চুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত করে আন্তর্জাতিক আইনের ভয়াবহ লঙ্ঘন করেছে ভারত। এর জেরে ২৪ কোটি মানুষের জীবন ধারণ হুমকির মুখে পড়েছে।

তিনি বলেন, মানবাধিকার আইনসহ আন্তর্জাতিক আইনের এটি ভয়াবহ লঙ্ঘন। আমরা কঠোরভাবে নিন্দা জানাচ্ছি ভারতের অন্যায়ভাবে চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণায়। ভারতকে আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন আইনি বাধ্যবাধকতা যথাযথভাবে মেনে চলে এবং পাকিস্তানের ২৪ কোটি জনগণের জীবন রক্ষাকারী নদীগুলোর পানি বন্ধ বা প্রবাহ বদলানোর যেকোনো পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকে।

পাকিস্তানি এ কূটনীতিক বলেন, এটি দুঃখজনক, একটি দর কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে পানিকে বেছে নিয়েছে।

উসমান জাদুন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কাছে দাবি জানান, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে চলমান ঘটনাপ্রবাহ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করার। এ ছাড়া প্রয়োজন হলে প্রাথমিক পদক্ষেপ নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।

উসমান জাদুন বলেন, নিরাপত্তা পরিষদকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হবে। যে পরিস্থিতি শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে বা মানবিক বিপর্যয় তৈরি করতে পারে।

dsjourneybd.com

dsjourneybd.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *