অন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে রেমিট্যান্সে বা প্রবাসী আয়। দেশের রিজার্ভ বাড়ছে এই রেমিট্যান্সে ভর করে। সংকটের এই সময়ে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে এটি। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, একক দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ৪২৭ কোটি ৬৮ লাখ (৪.২৮ বিলিয়ন) ডলার এসেছে, যা মোট রেমিট্যান্সের ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে রেমিট্যান্স এসেছে, তা গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। যুক্তরাষ্ট্রের ধারেকাছেও নেই সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত বা অন্য কোনো দেশে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটি থেকে প্রবাসী আয় প্রেরণের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ করারোপের প্রস্তাব করেছেন। এই প্রস্তাব কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বৈধ পথে প্রবাসী আয় কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন খাত–সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি–মার্চ প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় এসেছে ১৪৪ দশমিক ৪৯ কোটি মার্কিন ডলার, যা মোট প্রবাসী আয়ের প্রায় ১৮ শতাংশ। আর গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় এসেছে ৩৩ কোটি ৭ লাখ ডলার।
বাণিজ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপের পর এবার ট্রাম্প অভিবাসীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের ওপর ৫ শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন। ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট’ নামে হাউস বাজেট কমিটিতে অনুমোদিত আইনের আওতায় এই কর আরোপ করা হবে। এই আইনে মার্কিন নাগরিক ছাড়া সব অভিবাসীর প্রেরিত অর্থে করারোপ করা হবে। গ্রিন কার্ডধারী ও এইচ-১বি ভিসাপ্রাপ্তরাও এর আওতায় পড়বেন। কর আরোপের ক্ষেত্রে ন্যূনতম সীমা নির্ধারণ করা হয়নি, অর্থাৎ ছোট অঙ্কের অর্থ পাঠালেও কর প্রযোজ্য হবে। ফলে বাংলাদেশিদের প্রেরিত প্রবাসী আয়েও এই কর প্রযোজ্য হবে। ১ হাজার ১১৬ পৃষ্ঠার এই বিল গত রোববার রাতে হাউস অব রেপ্রেজেনটেটিভে ১৭-১৬ ভোটে পাস হয়েছে। এরপর তা সিনেটে উত্থাপিত হবে।