শ্রীলংকার কাছে ৭৭ রানে হারল বাংলাদেশ

কলম্বোতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভার ২ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪৪ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১০৬ রান করেছেন আসালঙ্কা। জবাবে খেলতে নেমে ৩৫ ওভার ৫ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৬৭ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ।

দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। ইমন উইকেটে থিতু হলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৩ রান করে এই ওপেনার ফিরলে ভাঙে ২৯ রানের উদ্বোধনী জুটি।

তিনে নেমে তামিমকে ভালো সঙ্গ দিচ্ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এই দুজনের জুটিতে জয়ের পথেই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। ১৭তম ওভারেই দলীয় শত রান স্পর্শ করেছিল বাংলাদেশ। তবে হঠাৎ রান আউটে কাটা পড়েন শান্ত। ২৬ বলে ২৩ রান করেছেন তিনি।

শান্ত ফেরার পরই ধস নামে বাংলাদেশের ইনিংসে। ৫ রান যোগ করতেই সাজঘরে ফেরেন বাংলাদেশের আরো ৬ ব্যাটার। লিটন দাস, তানজিদ তামিম, তাওহিদ হৃদয়, মেহেদি হাসান মিরাজ, তানজিম সাকিব ও তাসকিন আহমেদদের সবাই ব্যর্থ ছিলেন। তাদের মধ্যে লিটন, মিরাজ ও তাসকিন ডাক খেয়েছেন।

এরপর লেজের সারির ব্যাটারদের নিয়ে জাকের আলি কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছেন। পেয়েছেন ব্যক্তিগত ফিফটির দেখাও। তবে তা কেবলই হারের ব্যবধান কমিয়েছে।

এর আগে বোলিংয়ে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলটি অফ স্টাম্পের বেশ খানিকটা বাইরে করেছিলেন তানজিম সাকিব। পেস ছিল সঙ্গে অতিরিক্ত বাউন্সও। আর তাতেই টাইমিং করতে পারেননি। এজ হয়ে বল চলে যায় উইকেটকিপার লিটন দাসের গ্লাভসে। সাজঘরে ফেরার আগে ৮ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি নিশাঙ্কা।

নিশাঙ্কা ফেরার পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার নিশান মাদুশকা। পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে করেছিলেন তাসকিন, সেখানে ইনসাইড এজ হয়ে স্টাম্প ভেঙেছে মাদুশকার। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৩ বলে ৬ রান।

এক ওভার বোলিংয়ে ফিরে আবারো আঘাত হানেন তাসকিন। এবার তার শিকার কামিন্দু মেন্ডিস। অফ স্টাম্পের বাইরের গুড লেংথের বল মিড অফের ওপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন কামিন্দু। তবে টাইমিং না হওয়ায় মিড অফে মেহেদি মিরাজের হাতে ধরা পড়েন। ৪ বল খেলে ডাক খেয়েছেন তিনি।

২৯ রানে তৃতীয় উইকেট পরার পর জুটি গড়েন কুশল মেন্ডিস ও চারিথ আসালঙ্কা। তাদের চতুর্থ উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় লঙ্কানরা। তবে এই জুটি বিপজ্জনক হওয়ার আগেই ভেঙেছেন তানভীর ইসলাম। ওয়ানডেতে এটিই তার প্রথম উইকেট।

১৯তম ওভারের শেষ বলটি স্টাম্পের ওপর করেছিলেন তানভীর, সেখানে সোজা ব্যাটে ডিফেন্স করতে গিয়ে লাইন মিস করেন কুশল। বল সরাসরি প্যাডে আঘাত হানলে লেগ বিফোরের আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। ৪৫ রান করে কুশল ফেরায় ভাঙে ৬০ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি।

চতুর্থ উইকেট জুটির মতোই বড় হতে শুরু করছিল পঞ্চম উইকেট জুটি। একাধিক বোলিং পরিবর্তনেও সাফল্যের দেখা পাচ্ছিলেন না মেহেদি হাসান মিরাজ। তাই ৩২তম ওভারে ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। বোলিংয়ে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত। অনিয়মিত এই অফ স্পিনার আক্রমণে এসেই জুটি ভেঙেছেন।

চতুর্থ বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে করেছিলেন শান্ত। খানিকটা এগিয়ে এসে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন জানিথ লিয়ানাগে। টাইমিং না হওয়ায় সীমানার কাছে তানজিম সাকিবের হাতে ধরা পড়েন এই ব্যাটার। এটি শান্তর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় উইকেট।

এরপর মিলান রত্নায়েকে ও ভানিন্দু হাসারাঙ্গারা চেষ্টা করেছেন আসালঙ্কাকে সঙ্গ দিতে। তবে দুজনেই উইকেটে থিতু হওয়ার পর ফিরেছেন। বাকিদের যাওয়া-আসার মধ্যেও এক প্রান্তে দারুণ ব্যাটিং করেছেন আসালঙ্কা। ১১৭ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন তিনি। আসালঙ্কার বিদায়ের পর আর কেউ দাঁড়াতেই পারেনি। ফলে আড়াইশর আগেই অলআউট হয় স্বাগতিকরা।

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেছেন তাসকিন। এ ছাড়া ৪৬ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন তানজিম সাকিব। একটি করে উইকেট পেয়েছেন শান্ত ও তানভীর।

dsjourneybd.com

dsjourneybd.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *