চোখে ছানি অপারেশনের আগে ও পরে সতর্কতা

বয়স বাড়লে ছানি এমনিতেই পড়তে পারে। তবে চোখের আঘাত, চোখের প্রদাহ, ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ, দীর্ঘদিন চোখে কোনো ড্রপ দেওয়ার কারণে অল্প বয়সেও চোখে ছানি পড়তে পারে। ছানি তিন ধরনের হয়। নিউক্লিয়ার, কর্টিক্যাল ও সাব ক্যাপসুলার। সব ধরনের ছানির চিকিৎসা অপারেশন। কোনো ওষুধ বা চশমা দিয়ে ছানির চিকিৎসা সম্ভব নয়। ছানি অপারেশনে চোখের ভেতরের অস্বচ্ছ লেন্স বের করে সেই স্থানে কৃত্রিম লেন্স বসানো হয়।

কোন ধরনের অপারেশন ভালো?
বিভিন্নভাবে এই ছানির অপারেশন করা হয়ে থাকে। যেমন ফ্যাকো সার্জারি (সেলাইবিহীন ছানি অপারেশন) ও প্রচলিত ছানি অপারেশন (সেলাইযুক্ত)। ফ্যাকো সার্জারির ক্ষেত্রে চোখে কৃত্রিম লেন্স বসাতে ছানি বিশেষ প্রক্রিয়ায় গলিয়ে বের করে আনা হয়। এ পদ্ধতিতে রক্তক্ষরণ হয় না। আড়াই থেকে তিন মিলিমিটার ছিদ্র করা হয়। কোনো সেলাইয়েরও প্রয়োজন হয় না। এ অপারেশনের পর সাত দিন চোখে পানি ব্যবহার করা যাবে না। তিন-চার দিনের মধ্যে স্বাভাবিক কাজকর্ম করা যায় (গাড়ি চালানো, লেখাপড়া করা, টিভি দেখা, অফিস করা)। এতে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় না, অপারেশনের পর বাসায় চলে যাওয়া যায়। যেসব রোগী সহযোগিতা করতে পারেন, তাঁদের শুধু ড্রপের মাধ্যমে অপারেশন করা যায়। ইনজেকশন না দিলে এবং চিকিৎসক উপযুক্ত মনে করলে অপারেশনের পর চোখে ব্যান্ডেজ না দিয়ে বাড়ি পাঠাতে পারেন। জটিলতা হওয়ার আশঙ্কা নেই।

কী ধরনের লেন্স বাছাই করবেন
ফোল্ডেবল লেন্স হলো লেন্সের সর্বশেষ সংস্করণ। এটি নরম, ভাঁজ করা যায়। এ লেন্সের ক্ষেত্রে মাত্র ২.৫-৩ মিলিমিটার কাটতে হয়। এ ক্ষেত্রে অপারেশনের পর লেন্সের পেছনে অস্বচ্ছ হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। চোখ দ্রুত সেরে ওঠে। সাধারণ লেন্স শক্ত, ভাঁজ করা যায় না। এটির ক্ষেত্রে ৫.৫ মিলিমিটার কাটতে হয়। অপারেশনের পর লেন্স অস্বচ্ছ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এটি বসাতে ইনজেকশনের মাধ্যমে অবশ করতে হয়। স্বল্পপরিমাণ রক্তক্ষরণের আশঙ্কা থাকে।

আরও পড়ুন
অজান্তেই ব্লাড সুগার বাড়াচ্ছে আপনার এই ৭ অভ্যাস
১৪ জুলাই ২০২৫
অজান্তেই ব্লাড সুগার বাড়াচ্ছে আপনার এই ৭ অভ্যাস

অপারেশনের আগে করণীয়
অপারেশন করার আগে তিন-চারটি পরীক্ষা করতে হবে। যেমন ডায়াবেটিস আছে কি না, জানতে রক্তের শর্করা পরীক্ষা, হার্টের ইসিজি, চোখে যে লেন্স বসানো হবে, তার মাপের জন্য বায়োমেট্রিক, চোখের প্রেশার পরীক্ষা ইত্যাদি। আপনি কোনো ওষুধ নিয়মিত সেবন করে থাকলে চিকিৎসককে জানাবেন। যেমন রক্ত তরল করার ওষুধ খেলে তা সাময়িক বন্ধ রাখতে হতে পারে। জ্বর বা সংক্রমণ থাকলে সেই সময় অপারেশন না করে পিছিয়ে দেওয়া ভালো।

অপারেশনের পর করণীয়
অপারেশনের পর ছাড়পত্রে লিখিত ওষুধ নিয়মমাফিক ব্যবহার করতে হবে। সাত দিন চোখে সরাসরি পানি লাগানো যাবে না। অপারেশনের পরের দিন, সাত দিন পর এবং এক মাস পর মোট তিনবার চিকিৎসকের কাছে আসতে হবে। এর মধ্যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। মাথা বেশি ঝুঁকিয়ে কোনো কাজ করা যাবে না।

সংগৃহীত: দৈনিক প্রথম আলো

dsjourneybd.com

dsjourneybd.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *